শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট-পিটিএ) সই করেছে বাংলাদেশ। এই চুক্তি কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম আনুষ্ঠানিক পিটিএ।
এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রবিবার (৬ ডিসেম্বর) দুই দেশের মধ্যে এই ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং থিম্পু থেকে ভার্চুয়াল সংযোগের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভুটানের পক্ষে দেশটির অর্থমন্ত্রী চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ভুটানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির এই দিনটিকেই শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে দু’দেশ পিটিএ স্বাক্ষরের দিন হিসেবে বেছে নেয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং পিটিএ চুক্তি স্বাক্ষরের ঘটনাকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক আখ্যায়িত করে উভয় দেশের জনগণকে অভিনন্দন জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন সময় এসেছে, আমরা পারস্পরিক সুবিধার জন্য এবং আমাদের নাগরিকদের সামগ্রিক উন্নতি ও কল্যাণের জন্য আমাদের অসাধারণ সম্পর্ককে আরও বেশি অর্থবহ করে তুলি।’
তিনি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কেননা আমরা বিশ্বের কোন দেশের সঙ্গে এই প্রথম পিটিএ স্বাক্ষর করছি। আর ভুটানই প্রথম দেশ যে দেশটি একাত্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় সার্বভৌম এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং বলেন, বাংলাদেশকে ভুটানের স্বীকৃতির ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপনে আমরা আজ একত্রিত হয়েছি।
তিনি এ উপলক্ষে উভয় দেশের জনগণকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি কভিড-১৯ কে সফলভাবে মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও অভিনন্দন জানান।
ভুটান বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সবসময়ই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সবসময়ই ভুটানের পাশে থেকেছে। আর এই চুক্তি স্বাক্ষরই ভুটানকে অধিক গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণে বাংলাদেশের স্বীকৃতি।
এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে একটি লোগো প্রকাশ করা এবং ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এ উপলক্ষে পৃথক কেক কাটেন।
এই চুক্তির ফলে ভুটান তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্য এবং ইলেকট্রনিকসসহ ১০০টি বিভিন্ন ধরনের বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক সুবিধা প্রদান করতে সম্মত হয়েছে। অন্যদিকে, ফলমূলসহ ৩৪টি ভুটানি পণ্য বাংলাদেশে একই সুবিধা পাবে।
এ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় পিটিএ-এফটিএ স্বাক্ষরের যাত্রা শুরু হলো।