শবেবরাত এবং এই রাতে ইবাদত-বন্দেগি করা নির্ভরযোগ্য হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তাই রাসূল (সা.), সাহাবা-তাবেয়িনের যুগ থেকে অদ্যাবধি এ রাতে বিশেষভাবে নফল ইবাদত ধারাবাহিকতার সঙ্গে চলে আসছে।
অনেকে বলে বেড়ায় যে, শবেবরাতের কোনো শরয়ি ভিত্তি নেই। এমনও বলা হচ্ছে যে, এ রাতে ইবাদত করা বিদয়াত। কারণ শবেবরাত নাকি সহিহ কোনো হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
মূলত এমন ধারণা ইসলামের সুপ্রমাণিত বিষয়গুলোকেই জনসাধারণের মাঝে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।
নিন্মে শবেবরাত সম্পর্কে কয়েকটি সহিহ হাদিস উল্লেখ করা হলো-
হজরত আলী বিন আবু তালিব (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যখন শাবান মাসের অর্ধেকের রজনি আসে (শবেবরাত) তখন তোমরা রাতে নামাজ পড়, আর দিনেরবেলা রোজা রাখ।
নিশ্চয় আল্লাহ এ রাতে সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর আসমানে এসে বলেন, কোনো গোনাহ ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি আমার কাছে? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কোনো রিজিক প্রার্থী আছে কি? আমি তাকে রিজিক দেব।
কোনো বিপদগ্রস্ত মুক্তি পেতে চায় কি? আমি তাকে বিপদমুক্ত করে দেব। আছে কি এমন, আছে কি তেমন? এমন বলতে থাকেন ফজর পর্যন্ত। (সুনানু ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৩৮৮; বায়হাকি শুয়াবুল ইমান, হাদিস নং ৩৮২২)।
আম্মাজান হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, এক রাতে রাসূলকে (সা.) না পেয়ে খুঁজতে বের হলাম। খুঁজতে খুঁজতে জান্নাতুল বাকীতে (মদিনার কবরস্থান) গিয়ে আমি তাকে দেখতে পাই।
তিনি বললেন, কী ব্যাপার আয়েশা! তুমি যে তালাশে বের হলে? তোমার কি মনে হয় আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল তোমার ওপর কোনো অবিচার করবেন? জবাবে হজরত আয়েশা (রা.) বললেন, আমার ধারণা হয়েছিল আপনি অন্য কোনো বিবির ঘরে গিয়েছেন।
রাসূল (সা.) তখন বললেন, যখন শাবান মাসের ১৫তম রাত আসে অর্থাৎ যখন শবেবরাত হয়, তখন আল্লাহতায়ালা এ রাতে প্রথম আসমানে নেমে আসেন। তারপর বনু কালব গোত্রের বকরির পশমের চেয়ে বেশি সংখ্যক বান্দাদের ক্ষমা করে দেন। (সুনানুত তিরমিজি, হাদিস নং ৭৩৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং ২৬০২৮; মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ, হাদিস নং ১৫০৯)
হজরত মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, অর্ধ শাবানের রাতে (শবেবরাতে) আল্লাহতায়ালা তাঁর সব মাখলুকের প্রতি মনোযোগ আরোপ করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ ভাবাপন্ন ব্যক্তি ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং ৫৬৬৫; মুসন্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস নং ৩০৪৭৯ ইত্যাদি)