অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক চেতনা ও নারী মুক্তির পথপ্রদর্শক ছিলেন কবি সুফিয়া কামাল

“নারী পুরুষে বৈষম্যের অবসান কর, সামাজিক ন্যায্যতার অান্দোলনকে বেগবান কর’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও জেলা নারী উন্নয়ন কমিটির যৌথ আয়োজনে মানিকগঞ্জ স্যাক কার্যালয়ে বিকেল ৪.০০ ঘটিকা থেকে সন্ধা ৬.০০ ঘটিকা পর্যন্ত সমাজ প্রগতির মুক্তবুদ্ব্যির চর্চা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাতিঘর মহীয়সী নারী নেত্রী কবি সুফিয়া কামাল এর ১১০ তম জন্মদিনে বাল্য বিবাহ নারী নির্যাতন হত্যা ধর্ষণসহ সামাজিক সহিংসতা প্রতিরোধে সংলাপ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংলাপ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানে জেলা নারী উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও জেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য নারী নেত্রী শামীমা চায়না এর সভাপতিত্বে ও বারসিক কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারসিক অাঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়, কর্মসূচির ধারনাপত্র পাঠ করেন বারসিক কর্মকর্তা রাশেদা অাক্তার ও মাঠ সহায়ক ঋতু দাস। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান নারী নেত্রী শ্রীমতী লক্ষী চ্যাটার্জী।মহীয়সী নারী সুফিয়া কামাল এর জীবন সৃষ্টি ও কর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে এবং বিষয়ভিত্তিক সংলাপে আরো অংশগ্রহন করেন জেলা মানবাধিকার ফোরাম এর সভাপতি এ্যাড. দিপক কুমার ঘোষ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও নারী নেত্রী প্রফেসর উর্মিলা রায়,বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মজিবুর রহমান মাস্টার, জেলা শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি জনাব মীর্জা ইস্কান্দার, মানিকগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর সুলতানা আক্তার, মানিকগঞ্জ মহিলা কলেজের সাবেক জিএস ও শিক্ষক নেত্রী ঊষা রানী মন্ডল, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর জেলা সহ সভাপতি কাজী হুসনেয়ারা,জাসদ নেতা কমরেড ইকবাল হোসেন,ছাত্র প্রতিনিধি রাব্বি আহমেদ প্রমুখ।সহায়ক ছিলেন নিতাই চন্দ্র দাস ও সামায়েল হাসদা।
বক্তারা বলেন নারী জাগরণের আলোকবর্তিকা মহীয়সী নারী কবি সুফিয়া কামাল অবিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশের বরিশালে নানা বাড়ীতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা হলেও তার পৈত্রিক ভিটা কুমিল্লাতে। তার বাবা ছিলেন একজ অাদ্ধাত্বিক সাধু এবং মা ছিলেন প্রগতিবাদী। তাই মায়ের সহচারী হয়ে নানা বাড়ীতে মামার বিশাল লাইব্রেরীতে হয় তার অধ্যভাষায় ও সাহিত্য চর্চা। মাত্র ১৩ বছর বয়সে মামাতো ভাই নেহাল সরকার এর সাথে সংসার জীবন শুরু করেন। তার স্বামীও ছিলেন প্রগতিশীল। বর্নাঢ্য কর্মমুখর জীবনে তিনি হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন তার স্বামীর অকস্মাৎ মৃত্যুতে তিনি চরমভাবে আহত হলেও পিছপা হননি।তারপর আরেক প্রগতিশীল দেশপ্রেমিক ব্যাক্তি কামাল আহমেদ এর সাথে আবার সংসার জীবন শুরু করেও সাহিত্য চর্চা আরো বেগবান করেন।তিনি একাধারে সাহিত্য চর্চা, নারী মুক্তির আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। কচি কাচার মেলা, মহিলা পরিষদ, ছায়ানটসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। কর্মজীবনে পেয়েছেন একুশে পদক,স্বাধীনতা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার। তিনি সান্নিধ্যে পেয়েছেন মাহাত্ম্য গান্ধী, কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, কাজী নজরুল ইসলামসহ অসংখ্য গুনী মানুষের। সমাজের নারী পুরুষের বৈষম্য,ঘরে বাইরে নারী নির্যাতন প্রতিরোধসহ সকল প্রকার সামাজিক সহিংসতা বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামের সামনের সারিতে ছিলেন তিনি তার স্বপ্ন এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।তাই আমরা মহীয়সী নারীর আদর্শীক পথে উজ্জীবিত হয়ে নতুন করে অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সামাজিক ন্যায্যতার আন্দোলনকে বেগবান করতে সংগঠিত হয়ে কাজ করবো এবং নারীবান্ধব সমাজ বিনির্মানের পথকে সুগম করবো।

Facebook
Twitter
LinkedIn

আরো খবর

ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা সজাগ আছি: প্রধান উপদেষ্টা

ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা এখনো সজাগ আছি, ঐক্যবদ্ধ আছি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত যে

বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক, বলছেন ফেরত যাওয়া ভারতীয় ট্রাকচালকরা

বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত ভারত। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিসহ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলার প্রতিবাদে লাগাতার বিক্ষোভ, অবরোধ,

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১০০, ধ্বংসস্তূপে আটকা বহু মানুষ

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় শনিবার (৩০ নভেম্বর) আরও অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে চালানো হামলাতেই ৪০ জন

সরকারি কর্মচারীদের শুধু নিজের সুবিধা বৃদ্ধির কথা ভাবলে চলবে না

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুধু নিজেদের অধিকার আদায় বা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির কথা ভাবলে চলবে না। সাধারণ মানুষের সার্বিক কল্যাণে আত্মনিবেদিত হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভূমি এবং