শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বাসস জানায়, রাষ্ট্রপতির পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালেহ উদ্দিন ইসলাম আজ সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

করোনা মহামারির কারণে গত বছরের মতো এবারও সীমিত পরিসরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হচ্ছে।

১৯৭১ সালে জাতির চিরগৌরবের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের প্রাক্কালে এই দিনে (১৪ ডিসেম্বর) দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পৈশাচিকতায় মেতে উঠেছিল পাকিস্তানি হানাদার বর্বর সেনাবাহিনী। এ হত্যাযজ্ঞে সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের পদলেহী এ দেশের কিছু কুলাঙ্গার। রাজাকার, আলবদর, আলশামস নামে যারা ঘৃণিত, ধিক্কৃত।

দেশের বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল বিক্রমের সামনে টিকতে না পেরে গণহত্যাকারী পাকিস্তানি হানাদার সেনারা যখন মাথানত করে আত্মসমর্পণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন তার অব্যবহিত আগে তারা এক জঘন্য নীলনকশা করেছিল। স্বাধীন বাঙালি জাতিকে মেধা-মননহীন করে তুলতে তারা বেছে বেছে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান—শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিসেবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ সমাজে সৃজনশীলতায় অগ্রণী মানুষদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করে।

বিজয়ের পর রাজধানীর রায়েরবাজার ও মিরপুরের বধ্যভূমিতে বুদ্ধিজীবীদের চোখ ও হাত বাঁধা ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধারের পর ঘাতক পাকিস্তানি বাহিনীর এই সুপরিকল্পিত হত্যার পরিকল্পনাটি প্রকাশ পায়। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডে স্তম্ভিত হয় বিশ্ববিবেক।

পরবর্তী সময়ে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিষয়টি কেবল রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। পাকিস্তানি ঘাতক সেনা ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস চক্র সারা দেশে গণহত্যার শুরু থেকেই শিক্ষক, সংস্কৃতিসেবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সমাজসেবকসহ অগ্রণী চিন্তার মানুষদের ধরে হত্যা করেছে।

জাতি আজ ১৪ ডিসেম্বর বিনয় ও পরম শ্রদ্ধায় এই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করছে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি জানান, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ ও পথ অনুসরণ করে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে পারলেই তাঁদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে দলমত-নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একাত্তরের ঘাতক, মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-মৌলবাদী চক্রের রাষ্ট্র ও গণতন্ত্রবিরোধী সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার আহ্বান জানান। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ সব শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তাঁদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn

আরো খবর

ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা সজাগ আছি: প্রধান উপদেষ্টা

ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা এখনো সজাগ আছি, ঐক্যবদ্ধ আছি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত যে

বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক, বলছেন ফেরত যাওয়া ভারতীয় ট্রাকচালকরা

বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত ভারত। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিসহ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলার প্রতিবাদে লাগাতার বিক্ষোভ, অবরোধ,

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১০০, ধ্বংসস্তূপে আটকা বহু মানুষ

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় শনিবার (৩০ নভেম্বর) আরও অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে চালানো হামলাতেই ৪০ জন

সরকারি কর্মচারীদের শুধু নিজের সুবিধা বৃদ্ধির কথা ভাবলে চলবে না

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুধু নিজেদের অধিকার আদায় বা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির কথা ভাবলে চলবে না। সাধারণ মানুষের সার্বিক কল্যাণে আত্মনিবেদিত হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভূমি এবং