২০২৩ শিক্ষাবর্ষেও লটারিতে স্কুলে ভর্তি

২০২১ ও ২০২২ শিক্ষাবর্ষের মত ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ভর্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মন্ত্রী বলেছেন, গতবছর করণা পরিস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হলেও এই চিন্তাটি আমাদের আগের থেকেই ছিল। চলতি বছরও ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের পরিস্থিতি ছিল কিন্তু আমরা গত বছরের মতো লটারির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। আগামী ২০২৩ শিক্ষাবর্ষেও এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।

বুধবার বিকেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।

রাজধানীর কোনো কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় লটারি তে অংশগ্রহণ করছে না, তারা কেন্দ্রীয় লটারি অংশ নিলে কোন সমস্যা হতো কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোন কোন প্রতিষ্ঠান তারা নিজেরাই লটারি আয়োজনের জন্য আমাদের কাছে আবেদন জানিয়েছিল। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই তাদেরকে ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারাও আমাদের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ভর্তির লটারি আয়োজন করবেন।

এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, লটারি মাধ্যমে স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করায় মেধার সমতার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা ছিল তা বন্ধ হয়েছে। সেই সাথে বন্ধ হয়েছে কোচিং বাণিজ্য। আমরা শিক্ষাব্যবস্থায় যে ইতিবাচক পরিবর্তনগুলো আনছি সেটির ধারাবাহিকতায় গত বছরের মতো এ বছরও লটারির মাধ্যমে স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, আগে নামীদামী স্কুলগুলোতে ভর্তি হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা বিভিন্ন সময়ে দেখেছি। পছন্দের স্কুলে ভর্তির জন্য অভিভাবকদের বিভিন্ন অনৈতিক পন্থা পর্যন্ত অবলম্বন করতে দেখেছি। উন্নত বিশ্বের বিষয়গুলোতেও যেখানে শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিক, মনে করা হয় বিভিন্ন ধরনের মেঘা শিক্ষার্থী একসাথে থাকলে সেটি শিক্ষার্থী এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো। এসব বিষয় মাথায় রেখে আমরা লটারির মাধ্যমে ভর্তি ও রোল নাম্বার তুলে দিয়ে ইউনিক আইডি প্রচলনের কথা ভাবছিলাম। কোভিড ১৯ পরিস্থিতিতে যখন শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি আরো সামনে চলে আসলো তখন আমরা প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় অনলাইন লটারির মাধ্যমে স্কুলে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছিলাম।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, কেউ কেউ যারা মনে করেন, মেধার প্রতিযোগিতায় তাদের সন্তান অনেক নামিদামি স্কুলে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হতেন বা অন্য কোনো প্রভাব এর মাধ্যমে ভর্তি হতে পারেন তারা হয়তো কেউ কেউ লটারি মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তিতে মনোক্ষুন্ন হয়েছেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জনগণ এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন, এ উদ্যোগকে পছন্দ করেছেন।

তিনি বলেন, আগে নিজেদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানে, বাবা মায়ের পছন্দের প্রতিষ্ঠানে (মেধার প্রতিযোগিতায় করে) ভর্তি হতে না পারলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচণ্ড একটি মানসিক চাপ থাকতো। যেটি কখনই তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কাম্য নয়।

এরআগে শিক্ষামন্ত্রী সরকারি স্কুলে ভর্তির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এক মিনিট কয়েক সেকেন্ড সময়ের মধ্যেই ৭৫ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী সরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হন।

সারাদেশের চার শতাধিক সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ৮০ হাজার ১৭টি শূন্য আসনে ভর্তির আবেদন করেছিলেন ৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৩ শিক্ষার্থী। তারা মোট ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯১৫টি চয়েস দিয়েছিলেন। সে হিসাবে সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে প্রতিটি শূন্য আসনে গড়ে সাত জন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করেছিলেন। এসব পদে ৭৫ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।

প্রতিষ্ঠান প্রধান, অভিভাবক, শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত ওয়েবসাইট থেকে (http://gsa.teletalk.com.bd) থেকে তাদের নির্ধারিত আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ফল ডাউনলোড করতে পারছেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn

আরো খবর

ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা সজাগ আছি: প্রধান উপদেষ্টা

ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা এখনো সজাগ আছি, ঐক্যবদ্ধ আছি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত যে

বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক, বলছেন ফেরত যাওয়া ভারতীয় ট্রাকচালকরা

বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত ভারত। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিসহ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলার প্রতিবাদে লাগাতার বিক্ষোভ, অবরোধ,

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১০০, ধ্বংসস্তূপে আটকা বহু মানুষ

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় শনিবার (৩০ নভেম্বর) আরও অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে চালানো হামলাতেই ৪০ জন

সরকারি কর্মচারীদের শুধু নিজের সুবিধা বৃদ্ধির কথা ভাবলে চলবে না

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুধু নিজেদের অধিকার আদায় বা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির কথা ভাবলে চলবে না। সাধারণ মানুষের সার্বিক কল্যাণে আত্মনিবেদিত হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভূমি এবং